সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৯ পূর্বাহ্ন

যুবলীগ নেতা খায়রুল হত্যা : জামায়াত-শিবিরের ১৩ কর্মীর যাবজ্জীবন

নাটোর লালপুরের চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা খায়রুল ইসলাম হত্যা মামলার রায়ে জামায়াত-শিবিরের ১৩ নেতাকর্মীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে জরিমানা করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর ৫১ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নাটোর উপজেলার পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের মো. সেকেন্দারের ছেলে মো. করিম, মো. বানু সরদারের ছেলে মতি সরদার, কদিমচিলান গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম আজাদ প্রিন্স, পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের তৈয়ব সরদারের ছেলে মকলেছ সরদার, মকলেছ সরদারের ছেলে মহসিন সরদার, সেকেন্দারের ছেলে খলিল, রুস্তম আলীর ছেলে রানা, ফরজের ছেলে আনিসুর, লুৎফর প্রাংয়ের ছেলে রাজ্জাক, শাহজাহানের ছেলে জার্জিস, কদিমচিলান গ্রামের আন্দারুর ছেলে কালাম, মাজদারের ছেলে মিজানুর রহমান, পুকুরপাড়া চিলান গ্রামের কুদ্দুস প্রাংয়ের ছেলে সানা প্রাং। তারা সবাই জামায়াত-শিবিরকর্মী এবং সবাই বর্তমানে পলাতক।

 

তাদের সবার বিরুদ্ধে আনীত পেনাল কোডের (দণ্ডবিধির) ১৮৬০ এর ১৪৯ ও ৩০২ ধারার অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এর দায়ে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই রায়ে এই ১৩ আসামীকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৩ জন আসামীই পলাতক আছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে সাজামূলে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া দণ্ডিত আসামিদের কেউ এই মামলার সংশ্রবে হাজতবাস করে থাকলে তা মূল সাজা থেকে বাদ যাবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। আর দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের জামিনদারদের কাছ থেকে জামানতের অর্থ আদায়ের জন্য ফৌজদারী কার্যবিধির ৫১৪ ধারার কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মামলার ঘোষিত রায়ে।

রায় ঘোষণার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সরকার জানান, ২০১৩ সালে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর রায়ের পর নাটোরের যুবলীগ নেতা খায়রুলকে হত্যা করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। দীর্ঘ ১০ বছর পর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন রাজশাহীর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক।

রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু বলেন, এই মামলার মোট আসামী ছিলেন ৬৭ জন। এর মধ্যে তিনজন মারা যাওয়ায় তারা এমনিতেই খালাস। বাকি ছিলেন ৬৪ জন। এর মধ্যে ১৩ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। খালাস দেওয়া হয়েছে ৫১ জনকে।

২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর স্থানীয় জামায়াত-শিবির কর্মীরা নাটোরের লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় ওই এলাকার কয়েকটি বাড়ি ও পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুট করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই শাহীনুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। ()

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © gtbnews24.com
Web Site Designed, Developed & Hosted By ALL IT BD 01722461335